পরিসংখ্যানে প্রাক্কলনের মাধ্যমে নমুনা থেকে জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য অনুমান করা হয়। প্রাক্কলনের পদ্ধতিগুলো মূলত দুই ধরনের: গাণিতিক পদ্ধতি এবং আনুমানিক পদ্ধতি।
গাণিতিক পদ্ধতি (Statistical Methods)
গাণিতিক পদ্ধতিতে প্রাক্কলন করার জন্য নমুনা থেকে গণিত ও পরিসংখ্যানের বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
গড়ের ব্যবহার (Mean)
নমুনার গড় ব্যবহার করে প্রাক্কলন করা হয়।
সূত্র: \[ \bar{x} = \frac{\Sigma x}{n} \] এখানে, \( \bar{x} \) = নমুনার গড় \( \Sigma x \) = নমুনার মানগুলোর যোগফল \( n \) = নমুনার সংখ্যা
উদাহরণ: যদি কোনো এলাকার নমুনা আয়ের মান হয় $২০,০০০, $২৫,০০০ এবং $২২,০০০, তবে গড়: \[ \bar{x} = \frac{২০০০০ + ২৫০০০ + ২২০০০}{৩} = ২২,৩৩৩ \]
মধ্যমার ব্যবহার (Median)
নমুনার মধ্যবর্তী মান ব্যবহার করে জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য প্রাক্কলন করা হয়।
এটি এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর যেখানে গড় অতিরিক্ত বড় বা ছোট মান দ্বারা প্রভাবিত হয়।
গাণিতিক পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে প্রাক্কলন করা হয়।
বিশ্বাসযোগ্যতার স্তর (Confidence Level) নির্ধারণ করা হয়, যেমন ৯৫% বা ৯৯%।
সূত্র: \[ \bar{x} \pm Z \cdot \frac{s}{\sqrt{n}} \] যেখানে, \( \bar{x} \) = নমুনার গড় \( Z \) = নির্দিষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতার স্তরের জন্য Z-স্কোর \( s \) = নমুনার মান বিচ্যুতি \( n \) = নমুনার সংখ্যা
আনুমানিক পদ্ধতি (Heuristic Methods)
আনুমানিক পদ্ধতি পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে করা হয়।
১. পূর্ববর্তী তথ্যের ব্যবহার:
আগে সংগৃহীত তথ্য বা পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফল থেকে প্রাক্কলন করা হয়।
উদাহরণ: একটি এলাকার গত ৫ বছরের গড় বৃষ্টিপাত থেকে এ বছরের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নির্ধারণ।
২. অভিজ্ঞতার ব্যবহার:
গবেষক বা বিশেষজ্ঞের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রাক্কলন।
উদাহরণ: কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে চাষাবাদের সম্ভাব্য ফলন অনুমান করা।
৩. পূর্বাভাস পদ্ধতি (Forecasting Techniques):
ঐতিহাসিক প্রবণতা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ অনুমান।
উদাহরণ: একটি কোম্পানির বিক্রয়ের প্রবণতা দেখে ভবিষ্যতের বিক্রয় পরিমাণ প্রাক্কলন।
উদাহরণ: প্রাক্কলন পদ্ধতি প্রয়োগ
উদাহরণ ১: গড়ের পদ্ধতি
নমুনা: $১০,০০০, $১২,০০০, $১৪,০০০। গড়:
উদাহরণ ২: বিস্তার প্রাক্কলন
নমুনার গড়: $২২,০০০ বিশ্বাসযোগ্যতার স্তর: ৯৫% \( Z = ১.৯৬, s = ২,০০০, n = ৩০ \)
সীমা: $২১,২৮৪ থেকে $২২,৭১৬।
সারসংক্ষেপ
প্রাক্কলন পদ্ধতিতে গাণিতিক এবং আনুমানিক উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। গাণিতিক পদ্ধতি অধিক নির্ভুল এবং পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে ফলাফল প্রদান করে, যেখানে আনুমানিক পদ্ধতি বাস্তব পরিস্থিতি ও অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে।